ক্রোমোজোম কাকে বলে?
কোষের নিউক্লিয়াসের ভেতর অবস্থিত নিউক্লিয় জালক থেকে উৎপন্ন নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত যে-সুতোর মতো অংশ জীবদেহের বংশগত বৈশিষ্ট বহন করে এবং জীবের এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে পরিবাহিত করে, তাকে ক্রোমোজোম বলে।
ক্রোমোজোমের শ্রেণীবিভাগ
কার্যগত দিক থেকে ক্রোমোজোম কে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় (১) অটোজোম (২) সেক্স ক্রোমোজোম।
অটোজোম: যে সমস্ত ক্রোমোজোম জীবদেহের দৈহিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে অটোজোম বলে। মানুষের ২৩ জোড়া ক্রোমোজোমের মধ্যে ২২ জোড়া অটোজোম।
সেক্স ক্রোমোজোম: যে ক্রোমোজোম জীবের লিঙ্গ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, তাকে সেক্স ক্রোমোজোম। মানুষের দেহে সেক্স ক্রোমোজোম একজোড়া। পুরুষের দেহে XY স্ত্রী দেহে XX ।
সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুযায়ী ক্রোমোজোমের শ্রেণীবিভাগ — (১) টেলোসেন্ট্রিক (২) অ্যাক্রোসেন্ট্রিক (৩) সাবমেটাসেন্ট্রিক (৪) মেটাসেন্ট্রিক।
টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম: যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ার ক্রোমোজোমের একেবারে শেষে অবস্থান করে, তাকে টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
অ্যাক্রোসেন্ড্রিক ক্রোমোজোম: যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ারটি ক্রোমোজোমের কোনো একটি প্রান্তের কাছাকাছি অবস্থান করে, ফলে ক্রোমোজোমের একটি বাহু বেশ বড়ো এবং অন্য বাহুটি বেশ ছোটো হয়, তাকে অ্যাক্রোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
সাবমেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম: যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ারটি ক্রোমোজোমের মাঝখান থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত, তাকে সাবমেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম: যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ারটি ক্রোমোজোমের মাঝখানে অবস্থিত তাকে মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
সেন্ট্রোমিয়ারের সংখ্যা অনুযায়ী ক্রোমোজোমের শ্রেণীবিভাগ — (১) আসেন্টিক (২) মনোসেন্ট্রিক (৩) ডাইসেন্ট্রিক (৪) পলিসেন্ট্রিক।
আসেন্ট্রিক: যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ার থাকে না তাকে আসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
মনোসেন্ট্রিক: যে ক্রোমোজোমে একটিমাত্র সেন্ট্রোমিয়ার থাকে তাকে মনোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
ডাইসেন্ট্রিক: যে ক্রোমোজোমে দুটি সেন্ট্রোমিয়ার থাকলে তাকে ডাইসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।
পলিসেন্ট্রিক: যে ক্রোমোজোমে দুই-এর বেশি সেন্ট্রোমিয়ার যুক্ত থাকে তাকে পলিসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।