বিনয় ঘোষ

বিনয় ঘোষ (১৯১৭-১৯৮০)



  বিনয় ঘোষ একাধারে সমাজবিজ্ঞানী অন্যদিকে বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক।‘কাল প‍্যাঁচা’তার ছদ্মনাম। ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে ‘পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি’ গ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার পান। বিনয় ঘোষের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল–‘বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা ১৮০০-১৯০০’,‘শিল্পসংস্কৃতি ও সমাজ’(১৯৪০),‘নূতন সাহিত্য ও সমালোচনা’(১৯৪০),‘কলকাতার কালচার’(১৯৫৩),‘কলকাতা শহরের ইতিবৃত্ত’,‘জনসভার সাহিত্য’,‘পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি’(১৯৫৭),‘বিদ্যাসাগর ও বাঙালি সমাজ’(১৯৫৯),‘বাংলার নবজাগৃতি’(১৯৭৯),‘আন্তর্জাতিক রাজনীতি’(১৯৪১),‘ফ্যাসিজম ও জনযুদ্ধ’(১৯৪২),‘নববাবু চরিত’(১৯৭৯),‘সংস্কৃতির দুর্দিন’(১৯৪৫),‘বরণীয় বাঙালি’(১৯৫০),‘কাল প্যাঁচার নকশা’(১৯৫১),‘লোকসংস্কৃতি ও সমাজতত্ত্ব’(১৯৫১),‘অটোমেটিক জীবন ও সমাজ’,‘বাংলার বিদ্বৎসমাজ’,‘মেট্রোপলিটন মন’,‘মধ্যবিত্ত ও বিদ্রোহ’,‘সাময়িকপত্রে বাংলার চিত্র’(১৯৬২-১৯৬৬)।


বিনয় ঘোষ ('কালপেঁচা' ১৯১৭ - ১৯৮০) - রচনা পরিচিতি
১. কালপেঁচার নকশা (১৯৫১) গ্রন্থটির সূচনায় লেখক লিখেছেন, "বিশমণ ওজনের 'প্রবন্ধ' পাঠ করে করে আত্মারাম যখন খাঁচাছাড়া হবার উপক্রম হবে তখন আধঘন্টার জন্যে 'কালপেঁচার নক্‌সা' পড়বেন।" গ্রন্থে লেখক দৈনন্দিন 'সংলাপীয় ভঙ্গি'র ব্যবহার করেছেন। লেখক 'কালপেঁচা' ছদ্মনামে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে 'কালপেঁচার দুকলম' এবং ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে 'কালপেঁচার বৈঠকে' প্রবন্ধগ্রন্থ রচনা করেন। এই তিন গ্রন্থের রচনা একত্রিত করে পরবর্তীকালে 'পাঠভবন' থেকে 'কালপেঁচার রচনাসংগ্রহ' প্রকাশিত হয়।
২. টাউন কলিকাতার কড়চা (১৯৬০) গ্রন্থটিতে সমকালীন কলকাতার নাগরিক জীবনের নানা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। লেখকের 'কলকাতা কালচার' গ্রন্থের পরিপূরক এই রচনাটি। মোট নয়টি প্রবন্ধ আছে এই গ্রন্থে। প্রবন্ধগুলি হল 'ট্যাভার্ন ও কফিহাউস', 'সাহেব নবাবদের টাউন', 'নতুন বাঙালী বড়লোক', 'পালকি ও ল্যান্ডের যুগ', 'ক্রীতদাস ও কুলিমজুর', 'নতুন শহরে পুরাতন ভৃত্য', 'ডুয়েল', 'সেদিনের ইংরাজ বিচারক' এবং 'মধ্যবিত্তের বৈচিত্র'।
৩. সুতানুটি সমাচার (১৯৬১) গ্রন্থপরিচয়ে উল্লেখ করা হয়েছে "উইলিয়াম হিকি, এলিজা ফে, ফ্যানি পার্কস ও ভিক্‌তর জ্যাকমোর স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনি অবলম্বনে রচিত"। সমগ্র গ্রন্থটি চারটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত। অধ্যায়গুলির শিরোনাম যথাক্রমে 'উইলিয়াম হিকির স্মৃতিকথাঃ ১৭৭৭-১৮০৮', 'এলিজা ফে'র চিঠিপত্র', 'ফ্যানি পার্কস্‌-এর ভ্রমণবৃত্তান্ত' এবং 'ভিকতর জ্যাকমোর চিঠি'। গ্রন্থটি সাহিত্যিক শ্রী পরিমল গোস্বামীকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
৪. নববাবু চরিত (১৯৭৯) গ্রন্থটির পূর্বনাম 'শ্রীবৎসের নানা প্রসঙ্গ'। দ্বিতীয় সংস্করণে এই নামটি গ্রহণ করা হয়। প্রথম প্রকাশের গ্রন্থের পরিচিতিতে জানানো হয়, "নানাবিধ লঘুগুরু বিষয়ের কয়েকটি আলোচনা ও সমালোচনা এই গ্রন্থে সংকলিত হ'ল।" 'যুগান্তর' ও অন্য কয়েকটি সাময়িক পত্রিকায় গ্রন্থের লেখাগুলি প্রকাশিত হয়েছিল। গ্রন্থে মোট প্রবন্ধের সংখ্যা আটটি।
উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রবন্ধ হল 'পাঁকাল বন্দনা', 'মধ্য-বিত্ত', 'নববাবুকথা', 'কাক-কয়লা' ইত্যাদি।

এছাড়া -
১) কলকাতার কালচার (১৯৫৩)
২) বাংলার নবজাগৃতি (১৯৭৯)
৩) বিদ্যাসাগর ও বাঙালি সমাজ (১৯৫৮)
৪) সাময়িকপত্রে বাংলার সমাজচিত্র (১৯৬০)
৫) পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি (১৯৫০)
৬) মেট্রোপলিটন (১৯৬০)
৭) বিদ্রোহী ডিরোজিও (১৩৩৭ বঙ্গাব্দ)
৮) জনসভার সাহিত্য (১৩৬২)

নবীনতর পূর্বতন