প্রত্যয় || প্রকৃতি ও প্রত্যয়
প্রকৃতি: শব্দের যে মূল অংশকে আর বিভাজন করা যায় না বা তার মধ্যে আর কোন ভাববোধক ধ্বনি থাকে না সেই অংশকে প্রকৃতি বলে। প্রকৃতি দুই প্রকার— নাম প্রকৃতি ও ধাতু প্রকৃতি।
শব্দের মূল অংশ যদি নামপদকে বোঝালে সেটা নামপ্রকৃতি হবে। যেমন— হাত (নামপ্রকৃতি)+ আ= হাতা।
শব্দের মূল অংশ যদি কোন রকম কাজ করাকে বোঝালে তবে সেই অংশকে ধাতু প্রকৃতি বলে। যেমন— কর্ (ধাতু) + ই (বিভক্তি) = করি।
প্রত্যয়: যেসব ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি ধাতু প্রকৃতি ও নাম প্রকৃতির করে সংযুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে বলা হয় প্রত্যয়।
যেমন—
প্রত্যয় দুই প্রকার— কৃৎ প্রত্যয় ও তদ্ধিত প্রত্যয়।
কৃৎ-প্রত্যয়: ধাতু প্রকৃতির পরে যে প্রত্যয় যুক্ত হয় নতুন শব্দ গঠন করে, তাকে বলা হয় কৃৎ-প্রত্যয়। যেমন— √গম্ (ধাতু) + ক্তি (প্রত্যয়) = গতি (কৃদন্ত শব্দ)
√চল্ (ধাতু) + অন্ত (প্রত্যয়) = চলন্ত (কৃদন্ত শব্দ)
কৃৎ-প্রত্যয় যুক্ত শব্দকে কৃদন্ত শব্দ বলে।
তদ্ধিত-প্রত্যয়: শব্দ প্রকৃতি শেষে যে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ সৃষ্টি করে, তাকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে। যেমন— গঙ্গা (শব্দ প্রকৃতি) + ষ্ণেয় (প্রত্যয়)= গাঙ্গেয় (তদ্ধিতান্ত শব্দ)
তদ্ধিত প্রত্যয় যুক্ত শব্দ গুলিকে বলা হয় তদ্ধিতান্ত শব্দ। তদ্ধিতান্ত শব্দ বিভক্তি যুক্ত হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়।
ধাত্ববয়ব প্রত্যয়: ধাতু বা শব্দের পরে যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে নতুন ধাতু গঠন করে, তাকে ধাতব প্রত্যয় বলা হয়। যেমন— কর্ (ধাতু) + আ (ধাত্ববয়ব প্রত্যয়)= করা (ধাতু)
জ্ঞা (ধাতু)+ সন্ (ধাত্ববয়ব প্রত্যয়)= জিজ্ঞাস্ (ধাতু)।
ইৎ: ধাতু বা শব্দের সঙ্গে প্রত্যয় যুক্ত হলে প্রত্যয়ের কিছু অংশ ধাতু বা শব্দের সঙ্গে মিশে যায় এবং বাকি অংশ পায় এই লোপ পাওয়া অংশকে ইৎ বলে।
উপধা: ধাতু বা শব্দের অন্ত্যবর্ণের পূর্ববর্তীবর্ণকে উপধা বলা হয়। যেমন- চল্ ধাতুর অন্ত্যবর্ণ ল্ এর পূর্ববর্ণ চ হল উপধা।