অনুসর্গ || অনুসর্গ কাকে বলে?

অনুসর্গ 



যেসব অব্যয় বিশেষ্য বা সর্বনামপদের পরে পৃথকভাবে বসে শব্দবিভক্তির কাজ করে তাকে অনুসর্গ, পরসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয় বলে। যেমন-দ্বারা, দিয়া, অপেক্ষা, উপরে, নীচে, কাছে, পিছে মাঝে, মধ্যে, ভিতরে, বাহির, ঠাই, ধেয়ে, সঙ্গে, সাথে, সনে, সহিত, সহকারে, মতো, ছাড়া, ব্যতীত, বিনা, বিহনে, হতে, জন্য, তবে, নিমিত্ত, পানে, সহ, নিকটে,  প্রভৃতি।

অনুসর্গ বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের পরে বসে। এই জন্য এর নাম অনুসর্গ। অনুসর্গের অপর নাম পরসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয়। অনুসর্গগুলি এক ধরনের বিভক্তির কাজ করে। অনুসর্গের পূর্ববর্তী বিশেষ্য পদ কোন বিভক্তি যুক্ত হয়, আবার কখনো হয়না কিন্তু পদটি যদি সর্বনাম পদ হয় তাহলে বিভক্তিযুক্ত হবেই। অনুসর্গ গুলি বেশিরভাগ অব্যয়, কিছু কিছু অসমাপিকা ক্রিয়াপদ‌ও হয়।


অনুসর্গের শ্রেণীবিভাগ

অনুসর্গকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় — (ক) শব্দজাত অনুসর্গ (খ) ক্রিয়াজাত অনুসর্গ। 

শব্দজাত অনুসর্গ

দ্বারা, জন্যে, জন্য,  অপেক্ষা, উপরে, নীচে, কাছে, পিছে মাঝে, মধ্যে, ঠাই, ধেয়ে, সঙ্গে, সাথে, সনে, সহিত, সহকারে, মতো, ছাড়া, ব্যতীত, বিনা, বিহনে, হতে, তবে, নিমিত্ত, পানে, সহ, নিকটে, হেতু ইত্যাদিকে শব্দজাত অনুসর্গ বলে। যেমন– "মেয়ের জন্য এ গহনা গড়িয়াছি।"
"ছেলেটি জলের মধ্যে নামল।"

ক্রিয়াজাত অনুসর্গ

যেমন—দিয়া, দিয়ে, ধরিয়া, ধরে, করিয়া, করে, হইতে, হতে, হইয়া, হয়ে, বলিয়া, বলে প্রভৃতি হল ক্রিয়াজাত অনুসর্গ। অসমাপিকা ক্রিয়াপদ‌ ক্রিয়াজাত অনুসর্গরূপে বসে। যেমন– "দা দিয়ে কেটে ফেলবো।"
"আকাশ হইতে তারা খসিয়া পড়িল।"

অনুসর্গ বাক্যে প্রয়োগ

“ওপাড়া হইতে আয় মায়েঝিয়ে।”
বিনে শ্রীহরি কেমনে করি নয়নবারি সংবরণ।”
“কার তরে তুই কাদিস মাসী?”
"ধনের চেয়ে মান বড়।'
“ভূতের মতন চেহারা যেমন, নির্বোধ অতি ঘোর।”
"জগৎ মাঝে সব আছে।"
“আজ অবধি আমি দূরবর্তিনী হইলাম।”
“রঞ্জন বই আমার একদণ্ড চলে না।”
"তোমার দ্বারা এ কাজ হবে না।
“করিলে চেষ্টা কেষ্টা ছাড়া কি ভৃত্য মেলে না আর!”
“ঘরের বাহিরে দণ্ডে শতবার তিলে তিলে আইসে যায়।”
"পাঁচ দিন ধরে বৃষ্টি পড়ছে।"
বিনা কাজে বাজিয়ে বাঁশি কাটবে সকল বেলা।”
"দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় না"
“স্বপ্ন দিয়ে তৈরী সে দেশ, স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।”
"এমন কথা কার কাছ থেকে শুনলে?"

নবীনতর পূর্বতন