ভিটামিনের উৎস, কাজ ও অভাবজনিত রোগ

 ভিটামিনের উৎস, কাজ ও অভাবজনিত রোগ



ভিটামিন A

ভিটামিন A এর রাসায়নিক নাম: রেটিনোল।

ভিটামিন A-র উৎস :
উদ্ভিজ্জ: গাজর, টম্যাটো, সবুজ শাকসবজি, পাকা আম, পাকা পেঁপে, বাঁধাকপি ইত্যাদি। প্রাণীজ : কড, হাঙর, হ্যালিবাট ইত্যাদি মাছের যকৃৎ থেকে নিষ্কাশিত তেল এবং দুধ, মাখন, ডিমের কুসুম ইত্যাদি।

ভিটামিন A-র কাজ :
i) দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা, (ii) চোখের রড কোশ গঠন করা, (iii) ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখা ইত্যাদি।

অভাবজনিত রোগের লক্ষণ :
(i) রাতকানা বা নিকটালোপিয়া রোগ দেখা দেয়। (ii) জেরফথ্যালমিয়া দেখা দেয়। (i) দেহকে খসখসে হয়ে যায়। এই অবস্থাকে ফ্রিনোডার্মা বলে। (iv) স্নায়ুতন্ত্রের অংশবিশেষের অবক্ষয় দেখা দেয়।

ভিটামিন B কমপ্লেক্স

ভিটামিন B কমপ্লেক্সের উৎস :
উদ্ভিজ্জ: ঢেঁকিছাঁটা চাল, গম, চাল ও গমের কুঁড়ো, ভুট্টা, অঙ্কুরিত বীজ, সবুজ শাকসবজি, পাকা কলা, আনারস, পেয়ারা ইত্যাদি।
প্রাণীজ: মাছ, মাংস, দুধ, মাখন, যকৃৎ ইত্যাদি।

ভিটামিন B কমপ্লেক্সের কাজ :
(i) দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা, (ii) রক্ত কোন গঠন করা, (iii) স্নায়ু কোশ সুস্থ রাখা ও খিদে বাড়তে সাহায্য করা।

অভাবজনিত রোগের লক্ষণ :
(i) B₁ -এর অভাবে বেরিবেরি রোগ দেখা দেয়, (ii) B₂-এর অভাবে ঠোঁটে ঘা, জিহ্বায় যা দেখা দেয়, (iii) B₃ -এর অভাবে অস্ত্রে ঘা, চর্মরোগ দেখা দেয়, (iv) B₅ -এর অভাবে পেলো রোগ দেখা দেয়, (v) B₆ -এর অভাবে দেহবৃদ্ধি ব্যাহত হয়, অনিদ্রা, রক্তাল্পতা, স্নায়ুর দুর্বলতা ইত্যাদি দেখা দেয়, (vi) B₁₂ -এর অভাবে রক্তাল্পতা, মুখে ও জিহ্বাতে ঘা হয়।

ভিটামিন C

 রাসায়নিক নাম: ভিটামিন C-এর রাসায়নিক নাম: অ্যাসকরবিক অ্যাসিড।

ভিটামিন C-এর উৎস :
উদ্ভিজ্জ: আমলকী, লেবু, পেয়ারা, টম্যাটো ইত্যাদি।
প্রাণীজ: মাতৃদুগ্ধ, গোরুর দুধ ইত্যাদি।

ভিটামিন C-এর কাজ :
(i) রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ানো, (ii) দাঁত ও মাড়ির সুস্থতা বজায় রাখা, (iii) RBC গঠনে ও বিভিন্ন জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়ায় কো-এনজাইমরূপে কাজ করা।

অভাবজনিত রোগের লক্ষণ :
(i) স্কার্ভি রোগ হয়, (ii) দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হয়, (iii) রক্তায়তা দেখা দেয়।

ভিটামিন D

রাসায়নিক নাম : ভিটামিন D-এর রাসায়নিক নাম ক্যালসিফেরল।

ভিটামিন D-এর উৎস :
উদ্ভিজ্জ: বিভিন্ন উদ্ভিজ্জ তেল ও বাঁধাকপি।
প্রাণীজ : কড়, হাঙর, হ্যালিবার্ট প্রভৃতি মাছের যকৃতের তেল এবং দুধ, মাখন, ডিম।

ভিটামিন D-এর কাজ :
(i) অস্থি গঠনে সহায়তা করা, (ii) ক্যালশিয়াম ও ফসফরাসের বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি।
অভাবজনিত রোগের লক্ষণ : (i) শিশুদের রিকেট রোগ হয়, (ii) ব্যাস্কদের অস্টিওম্যালেসিয়া হয়।

ভিটামিন E

রাসায়নিক নাম: ভিটামিন E -এর রাসায়নিক নাম টোকোফেরল।

ভিটামিন E-এর উৎস :

উদ্ভিজ্জ: অঙ্কুরিত গম থেকে নিষ্কাশিত তেল, লেটুস শাক, মটরশুঁটি ইত্যাদি।
প্রাণীজ : দুধ, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি।

ভিটামিন E-এর কাজ :
(i) বন্ধ্যাত্ব বোধ করা, (ii) স্তনদুগ্ধের ক্ষরণ ঘটানো ইত্যাদি।

অভাবজনিত রোগের লক্ষণ :
(i) বন্ধ্যাত্ব প্রাপ্তি হয়, (ii) মাতৃদেহে স্তনদুগ্ধ স্মরণ কমে যায়, (iii) ভ্রূণের বুদ্ধি ব্যাহত হয়। (iv) অ্যান্টি-অক্সিডেন্টরূপে কাজ করে।

ভিটামিন K

রাসায়নিক নাম: ভিটামিন K-এর রাসায়নিক নাম ফাইলোকুইনন।

ভিটামিন K-এর উৎস :
উদ্ভিজ্জ: টাটকা শাকসবজি, পালংশাক, টম্যাটো, অঙ্কুরিত গন, বাঁধাকপি, সয়াবিন প্রাণীজ: দুধ, মাখন, যকৃৎ, বৃক্ক ইত্যাদি।

  ভিটামিন K-এর কাজ :
(i) রক্ততঞ্চনে সহায়তা করে, (ii) কো-ফ্যাক্টর রূপে ATP উৎপাদনে সাহায্য করা।

অভাবজনিত রোগের লক্ষণ :
(i) স্বাভাবিক রক্ত তঞ্চন পদ্ধতি ঘটে না। ফলে কোনো স্থান কেটে রক্তক্ষরণ বা হেমারেজ হতে থাকে। (ii) মাইটোকনড্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন পদ্ধতি বিঘ্নিত হয়।

ভিটামিন প্রশ্ন ও উত্তর 📌📌


নবীনতর পূর্বতন