পরিমাপের একক, পদ্ধতি এবং যন্ত্র সমূহ
একক : কোনো ভৌতরাশির ক্ষুদ্রতম এবং সর্বজনস্বীকৃত এটি অংশকে প্রমান হিসাবে ধরে নিয়ে, যার পরিমাণ ওই প্রমান মানের কত অংশ বা গুণ তা মাপা হয়। সেই ক্ষুদ্রতম মানকে এই রাশির একক বলে।
প্রত্যেক ভৌত রাশি পরিমাপের জন্য এককের প্রয়োজন। এছাড়া ভৌত রাশির মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে, সমীকরণ যাচাই করার জন্য এককের প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন পদ্ধতিকে এই এককগুলি বিভিন্ন। যেমন— C.G.S. পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একক সেমি। কিন্তু S.I. পদ্ধতিতে মিটার। ভরের একক C.G.S. পদ্ধতিতে গ্রাম, S.I পদ্ধতিতে কিলোগ্রাম ইত্যাদি।প্রাথমিক একক বা মৌলিক একক: যেসব রাশির একককে নিরপেক্ষভাবে প্রকাশ করা যায় অর্থাৎ একটি একক প্রকাশ করার জন্য অপর কোনো এককের প্রয়োজন হয় না, এমন একককে বলে প্রাথমিক একক।
যেমন: দৈর্ঘ্যের একক, ভরের একক, সময়ের একক ইত্যাদি। এই রাশি গুলি থেকে অন্যান্য রাশির একক গঠন করা হয়।
লন্ধ একক: একই প্রাথমিক একক থেকে একাধিক প্রাথমিক একক বা একাধিকবার ব্যবহার করে যে একক গঠিত হয়, সেই একককে বলে লন্ধ একক। যেমন–ক্ষেত্রফলের একক প্রকাশ করতে দৈর্ঘ্যের একককে দু-বার ব্যবহার করতে হয়। ক্ষেত্রফল= দৈর্ঘ্য × প্রস্থ ।
আবার বেগের একককে, একই প্রাথমিক একক দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। এখানে একাধিক (মিনিট এবং সেকেণ্ড) প্রাথমিক একক একবার করে ব্যবহার করতে হয়।
এককের বিভিন্ন পদ্ধতি: বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রকম পরিমাপের পদ্ধতি প্রচলন আছে তাদের মধ্যে প্রচলিত পদ্ধতি হলো– C.G.S, S.I, fps, mks
সি.জি.এস (C.G.S):
দৈর্ঘ্যের একক—সেন্টিমিটার।
ভরের একক — গ্রাম
সময়ের একক — সেকেন্ড
ঘনত্বের একক—গ্রাম / ঘন-সেন্টিমিটার।
এস.আই (S.I):
দৈর্ঘ্য একক — মিটার(m)
ভরের একক — কিলোগ্রাম (kg)
সময়ের একক — সেকেন্ড (s)
আলোক-দীপ্তি — ক্যালেন্ডার (Cd)
উষ্ণতা — কেলভিন (K)
তড়িৎপ্রবাহ — অ্যাম্পিয়ার (A)
বস্তুর পরিমাণ — মোল (mol)
fps : দৈর্ঘ্য — ফুট, সময় — সেকেন্ড ,ভর — পাউন্ড।
এম.কে.এস: দৈর্ঘ্য — মিটার ,ভর — কিলোগ্রাম ,সময় — সেকেন্ড।
মাত্রা (Dimension) : কোনো ভৌতরাশিকে প্রকাশ করার জন্য মূল রাশিটিকে সংক্ষেপে প্রকাশ করে যে ঘাতে উন্নীত করা হয়, সেই ঘাতযুক্ত সংক্ষিপ্ত আকারটিকে ওই রাশির মাত্রা বলে। যেমন–দৈর্ঘ্যকে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয় 'L' ভর (M), সময় (T), তড়িৎপ্রবাহমাত্রা (A), তাপমাত্রা (K), দীপনশক্তি (cd) এবং পদার্থের পরিমাণ (mol)।
মাত্রাহীন রাশি: যেসব ভৌত রাশি দুটি সমজাতীয় রাশির অনুপাত, তাদের মাত্রাহীন রাশি বলে। সাধারণত এককহীন রাশি মাত্রেই মাত্রাহীন রাশি। যেমন– কোণ। কোণের একক রেডিয়ান। আপেক্ষিক গুরুত্ব, পারমাণবিক গুরুত্ব।
আপেক্ষিক গুরুত্ব: যে কোন পদার্থের ভর, 4°C এর ওই পদার্থের সম আয়তনের বিশুদ্ধ জলের আনুপাতিক মানকে ওই পদার্থের উপাদানের আপেক্ষিক গুরুত্ব বলে। আপেক্ষিক গুরুত্ব একক হীন রাশি।
পরিমাপের যন্ত্র সমূহ:
দৈর্ঘ্য পরিমাপের যন্ত্র — সাধারণ স্কেল, স্লাইড ক্যালিপার্স, স্ক্রুগেজ, স্ফেরোমিটার।
ভর পরিমাপের যন্ত্র— ওজন বাক্স, সাধারণ তুলা।
সময় পরিমাপের যন্ত্র—বিরাম ঘড়ি, বালিঘড়ি, সূর্যঘড়ি, সিজিয়াম ঘড়ি, ক্রোনোমিটার।