কাশীরাম দাস – অনুবাদ সাহিত্য

কাশীরাম দাস



কবি পরিচয়: চৈতন্য পরবর্তী যুগে মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কায়স্থবংশীয় কাশীরাম দাস। কাশীরাম দাসের প্রকৃত নাম কাশীরাম দেব। বর্ধমান জেলার ইন্দ্রানী পরগনা সিঙ্গিগ্রামে ষোড়শ শতাব্দীতে কাশীরাম দাস জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কমলাকান্ত দেব। কমলাকান্তের তিন পুত্রের নাম হল কৃষ্ণ, কাশীরাম, গদাধর। জাতিতে কায়স্থ ছিলেন বলে এরা নামের সঙ্গে ‘দাস’ যোগ করেন। কাশীরাম বৈষ্ণব ছিলেন।

কাব্য গ্রন্থ ও পরিচয়: কাশীরাম ১৬০২-১৬০৩ খ্রিস্টাব্দে অনুবাদের কাজ শুরু করেন এবং ১৬০৪ খ্রিস্টাব্দে বিরাট পর্ব রচনা শেষ করেন। তিনি মেদিনীপুরের আউসগরের জমিদার গৃহে বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন এবং সেখানকার পাঠশালায় শিক্ষকতা করেন। মহাভারত অনুবাদক কালীপ্রসন্ন সিংহের মহাভারতের উপসংহারে লেখা হয়েছে-

‘আদি সভা বন বিরাটের কতদূর।
ইহা রচি কাশীরাম গেলা স্বর্গপুর॥’


এই সূত্র থেকে জানা যায় আদিপর্ব, সভাপর্ব, বনপর্ব ও বিরাটপর্বের কিছু অংশ লিখে কাশীরাম পরলোকগমন করেন। কাশীরামের মহাভারত আক্ষরিক অনুবাদ নয়, ভাবানুবাদ নয়-অনেকাংশে মৌলিক সৃষ্টি। বাংলা ও বাঙালির কথা চিন্তা করে সেদিকে তাকিয়ে স্বাধীনভাবে তিনি মহাভারত রচনা করেন। সংস্কৃত মহাভারত ছাড়াও নানা পুরান ও উপপুরাণ থেকে কাশীরাম তাঁর কাব্যে কাহিনীর উপাদান সংগ্রহ করেছেন।  যেমন-শ্রীবৎস চিন্তার উপাখ্যান, পারিজাত হরণ, সত্যভামা তুলাব্রত, রাজসূয় যজ্ঞে বিভীষণের আগমন প্রভৃতি ঘটনা ব্যাসদেবের মহাভারতে নেই। সপ্তদশ শতকের শ্রেষ্ঠ মহাভারত অনুবাদক তিনি।

নবীনতর পূর্বতন