দৌলত কাজি

দৌলত কাজি

 সপ্তদশ শতাব্দীতে আবির্ভূত কবি দৌলত কাজির ‘লোরচন্দ্রানী বা ‘সতীময়না’ রোমান্টিক আখ্যানকাব্য হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।

 চট্টগ্রামের রাউজান থানার অন্তর্গত সুলতানপুর গ্রামে তাঁর জন্ম হয়।

 অল্প বয়সেই তিনি নানা বিদ্যা অর্জন করেন। আরাকান রাজ থিরি-থু-ধম্মার (শ্রীসুধর্মা) রাজসভায় তিনি পরম সমাদরে গৃহীত হন এবং আরাকানের সমরসচিব আশরফ খানের পৃষ্ঠপোষকতায় ও উপদেশে ১৬২১ থেকে ১৬৩৮ খ্রীঃ অব্দের মধ্যে কোনো এক সময়ে হিন্দি কাব্য অবলম্বনে 'লোরচন্দ্রানী' বা 'সতীময়না' রচনা করেন।

  কাব্যটির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ রচনার পর অকালে তাঁর লোকান্তর হয়। পরে প্রসিদ্ধ কবি সৈয়দ আলাওল আরাকানরাজ সান্দথুধম্মার (চন্দ্র সুধর্মা) প্রধানমন্ত্রী সুলেমানের নির্দেশে ১৬৫৯ খ্রীঃ অব্দে এ-কাব্যের বাকি এক-তৃতীয়াংশ সমাপ্ত করেন।

 

মিয়াসাধন নামে এক হিন্দিভাষী কবি ঠেট-গোহারী (গ্রাম্য-হিন্দি) ভাষায় পূর্বে সতীময়নার কাহিনী লিখেছিলেন। কিন্তু সে ভাষা বাঙালির বোধগম্য নয় বলে আরাকানের আশরফ খান ও অন্যান্য সম্ভ্রান্ত মুসলমান রাজকর্মচারীর অনুরোধে দৌলত কাজি হিন্দি কবি মিয়াসাধনের কাব্যকে বাংলা পয়ার-ত্রিপদীতে রূপান্তরিত করেন।

বিহারে প্রচলিত লোরিকমপ্লের গল্পটি সতীময়নার আখ্যান। মুল্লা দাউদ নামে আর-এক হিন্দি কবি ঐ একই কাহিনী নিয়ে 'চন্দায়ন' কাব্য রচনা করেছিলেন।

সম্প্রতি আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই সমস্ত লোকগাথার সংকলন প্রকাশিত হয়েছে, মিয়াসাধনের ‘মৈনা কো সত্‌' কাব্যও প্রকাশিত হয়েছে।

দৌলত কাজি মিয়াসাধনের ‘মৈনা কো সত্’ কাব্য থেকেই তাঁর 'সতীনানা’ বা ‘লোরচন্দ্রানী'র উপাদান সংগ্রহ করেছিলেন।

লোর ও চন্দ্রানীর প্রেমের আধ্যান আর তার সঙ্গে লোরের প্রথমা পত্নী ময়নার সতীত্ব কাহিনী ও স্বামী কর্তৃক পরিত্যক্ত হবার পর তাঁর করুণ বিলাপ কর্ণনাই এই আখ্যানটির প্রধান গল্প।

·        গোহারী দেশের রাজা মোহরার সুন্দরী কন্যা চন্দ্রানীর সঙ্গে এক নপুংসক বামনের বিবাহ হয়।

·        ধর্মবর্তী নগরীর রাজা উপেন্দ্রদেব তাঁর গর্ভবর্তী পত্নীকে কোনো কারণে পরিত্যাগ করেন-এঁর নাম রতনকলিকা।

নবীনতর পূর্বতন